এম এচই কুলাউড়া বিডি ডট কম
সিলেট বিভাগের সীমান্তবর্তী চা বাগানে এইডস্ আক্রমনের ঝুঁকি বাড়ছেভারতের সঙ্গে দীর্ঘ ১৭’শ মাইল সীমান্ত এলাকার বিপরীতে সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলিতে মরণব্যাধী এইডস সংক্রমন বেড়েই চলছে। জাতিসংঘে’র নিয়ন্ত্রনাধীন জনসংখ্যা তহবিলের অর্থায়নে পরিচালিত ভাউচার স্কীম বাস্থবায়ন সম্পর্কিত জরিপে এ তথ্যে জানা গেছে । রিপোর্টে আরও বলা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী এইডস ঝুঁকিপূর্ণ দেশ পার্শ্ববর্তী ভারতে চিকিৎসা সহ বিভিন্নভাবে লাখ লাখ বাংলাদেশী যাতায়াত করছে। দেশে ফেরার সময় এদের এইচআইভি পরিার ব্যবস্থা না থাকায় মরণব্যাধী জীবানু নিয়ে ফিরছেন। ভারতে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ভাবে লাখ লাখ বাংলাদেশী যাতায়াত করছেন। অপরদিকে চা শিল্প জনগোষ্ঠি’র প্রজনন স্বাস্থ্যরা ও এইডস প্রতিরোধে শ্রম মন্ত্রণালয়ে’র নিয়ন্ত্রনাধীন চা শিল্প শ্রম কল্যান বিভাগ ঝুকিপূর্ণ দেশের ৬৫টি চা বাগানে একটি সমন্নিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘে’র নিয়ন্ত্রনাধীন জনসংখ্যা তহবিলের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এ প্রকল্প। ভাউচার স্কীম বাস্থবায়ন সম্পর্কিত জরিপে’র তথ্যে জানা গেছে, পৃথিবীর সবছে ঝুঁিকপূর্ণ দেশ ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী হওয়ায় বৈধ ও অবৈধ পথে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। ভারতে’র সঙ্গে দীর্ঘ ১৭শ মাইল সীমান্ত এলাকা’য় সিলেট বিভাগে’র সীমান্তবর্তী চা বাগান গুলো’র মধ্যে মরণব্যাধী এইডস ছড়িয়ে পড়ছে বলে অনেকে’ই ধারণা করছেন, ভাউচার স্কীম বাস্থবায়ন সম্পর্কিত জরিপে’র তথ্যে আরও জানা গেছে, মরণব্যাধী জীবানু বহনকারী এইচআইভি এদেশে’র প্রায় ৮ হাজার হতভাগ্য মানুষ। সরকারী হিসাব মতে এর লোকসংখ্যা ৪৬৫ জন। এদের মধ্যে এইডস রোগী ৮৭ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছে ৪৪ জন। এ ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব মতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত এরই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আশংকা গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। যারা এসমস্থ জীবানু বহন ও ব্যাধীতে ভুগছেন তারা নিজেও জানেনা এইডস রোগে আক্রান্ত বলে। দেশের চা শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে সীমান্তবর্তীতে অবস্থান করায় বাগান গুলোতে বসবাসকারী চা শ্রমিকের অজ্ঞতার কারণে জীবানু বহন করে ঝুকি বাড়াচ্ছে চা শিল্প কল্যান পরিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত বেশ কয়েকটি চা বাগানের জরিপে এ ধরনেরর সংক্রমের সম্ভবনার প্রাথমিক একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। যথাক্রমে তেলিয়াপাড়া, সুরমা, রেমা, নালুয়া, ধলাই, সোনারূপা, আতিয়ারভাগ, দিলখোশা, শিলুয়া ও বৃন্দাবন চা বাগানের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার চা শ্রমিকের উপর এই জড়িপ চালানো হয়। স্বাস্থ্য সম্পন্ন তরুণ ও যুব বয়সী মহিলা- পুরুষের উপর পরিচালিত জরিপে ৫% সংক্রমিত প্রজননতন্ত্র যৌনবাহিত রোগের উৎসর্গ রয়েছে। বিবাহিতদের চেয়ে অবিবাহিতের সংখ্যাই এখানে বেশি। প্রতিবেশি বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতের এইডস সংক্রমিত রাজ্য মেঘালয়ের মনিপুরের গা ঘেষা বাংলাদেশের চা শিল্প এলাকার ৫ লাধিক চা শ্রমিক এইডস সংক্রমনের ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। চা শিল্প শ্রম কল্যান বিভাগের প্রকল্পে বলা হয়,এদেশের ও ভারতীয় নাগরিকদের উভয়ের মধ্যে অবাধে যাতায়াতের সুযোগ থাকায় চা শ্রমিক, মনিপুরী ও খাসিয়ারা সহজেই সংক্রমিত হচ্ছে। এর শিকার ও নেতিবাচক প্রভাবে বাংলাদেশের চা শিল্পে কেনিয়ার চা শিল্পের মতো সংকটাপন্ন পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে বলে আশংকিত। এ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারী বেসরকারী এমন কি চা শিল্পের সংশিষ্ঠ শ্রমিক ইউনিয়নের তেমন কোন কার্যক্রম উদ্যেগ পরিলতি হচ্ছে না। যৌন আচরণ সম্পকিত ও পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে পরিস্কার কোন ধারণা না থাকায় আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের চেয়ে প্রথাগত ধারণার অধিক বিশ্বাসী হওয়ায় বিশেষ করে চা জনগোষ্ঠির সদস্যরা সংক্রমিত হওয়ার আশংকাই বেশি। এইডস এর সংক্রমিত চা শ্রমিকরা তাদের অজ্ঞতার কারণেই আধুনিক চিকিৎসার পরিবর্তে প্রথাগত চিকিৎসায় ফলপ্রসূ না হয়ে আতœহত্যার পথই বেছে নিচ্ছে। এদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিতি কর্মী বাহিনীর মাধ্যমে এদেরকে প্রশিণ দিয়ে সচেতন করে গড়ে তোলা একান্ত আবশ্যক।