বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০০৯

সিলেটের

সিলেটের অর্থনৈতিক ইতিহাস
সিলেট বাংলাদেশের উওর পূর্ব সীমান্ত বর্তী অঞ্চল। এর তিন দিকেই রয়েছে ভারতীয় এলাকা। উওর খাসিয়া ও জ্যৈন্তিয়া পাহাড়, পূর্ব কাছাড়ের করিম গঞ্জ এবং দক্ষিনে পার্বত্য ত্রিপুরা। শুধু পশ্চিম দিকে রয়েছে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোর গঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলাসমূহ। এর আয়তন ১২,৫৯৬ বর্গ কিলোমিটার যা পৃথিবীর বেশ কয়েকটি স্বাধীন দেশের চেয়েও বেশী।

সিলেটের অর্থনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা চারটি পর্বে ভাগ করা যায়। যথা:
১. প্রাচীন।২. মধ্য।৩. ঔপনিবেশিক।৪. ও বর্তমান যুগ।
üপ্রাচীন যুগ:- সিলেটের আদি বাসীদের সুস্পষ্ট পরিচয় এখন ও জানা যায়নি। তবে ইতিহাসবিদদের মতে সুদূর অতীতে সিলেট অষ্ট্রিক লোক জন বসবাস করত। অষ্ট্রিক বাসী লোকেরা জীবন ধারনের জন্য শিকার ও কৃষি কাজের উপর নির্ভর করত। ডাঙ্গায় তারা পশু পাখি এবং পানি মাছ শিকারে পটু ছিল। মাছ শুকিয়ে শুটঁকি তৈরী করার কৌশল ও তাদের জানা ছিল। সমতল ভূমিতে এবং স্তরে পাহাড়ের গা কেটে চাষাবাদের মধ্যমে তারা বন্য ধান গাছকে কৃষি বস্ত করে তুলেছিল। কিন্তু তারা পশু পালন জানত না। ধান ছাড়া তারা বেগুন, লাউ, লেবু, কলা, হলুদ, নারিকেল, জাম্বুরা, কামরাঙ্গা, ডুমুর, ডালিম, পান, সুপারি ইত্যাদি চাষ করত। ষষ্ট শতকে প্রাচীন ভারতে অন্যান্য অঞ্চলে প্রচলিত ‘অগ্রহার’ ব্যবস্থা সিলেটে সম্ভ্রসারিত হওয়ার এই অঞ্চলে লাঙ্গঁল ভিত্তিক চাষাবাদের প্রবর্তন ঘটে। এর ফলে সিলেট অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার এক নবযুগের সূচনা হয়।

üমধ্য যুগ:- ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে হযরত শাহজালাল কর্তৃক সিলেট মুসলিম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন বাংলার সুলতান ছিলেন শামসু্দ্দিন ফিরোজ শাহ। শাহজালাল পরবর্তী প্রায় দুইশ বছরের ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। কারন এ সময় বাংলাদেশ স্বাধীন ছিল বলে দিল্লি কেন্দ্রিক ঐতিহাসিক বিবরনীতে এ অঞ্চলের বিবরণ ছিল অনুপস্থিত। ইতিহাসের সে অন্ধকার যুগের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে পরোক্ষ ভাবে জানা যায় দুই জন বিদেশী পর্যটকের ভ্রমন বৃত্তান্ত থেকে।


মরক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা বাংলাদেশ এসেছিলেন ১৩৪৫-৪৬ খ্রিস্টাব্দে। সিলেটে হযরত শাহজালালের সাথে সাক্ষাত করার জন্য তিনি এদেশে এসেছিলেন। সিলেটে তিনদিন অবস্থান করে তিনি নদীপথে তিনি সোনারগাঁও যান। যাত্রাপথে তিনি মেঘনা নদীর উভয় তীরে সমৃদ্ধ কৃষি ক্ষেত্র ও ফলের বাগান দেখতে পান এবং নদীতে লক্ষ করেন অসংখ্য নৌকার ভিড়। এ থেকে অনুমান করা যায় কৃষিই তখন এই অঞ্চলের প্রধান উপ জীবিকা ছিল এবং নৌ পথই ছিল চলাচল ও পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। তিনি খাদ্য দ্রব্য ও অন্যান্য দ্রব্যের স্বল্প মূল্য লক্ষ্য করেন। স্বামী-স্ত্রী ও একজন ভূত্যসহ একটি পরিবারের এক বছরের খাদ্যদ্রব্য মাত্র ৭ টাকা। উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক ও অন্যান্য করও রাজাকে দিতে হতো বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইবনে বতুতার বর্ণনায় বাংলার যে প্রাচুর্যোর চিত্র ধরা পড়েছে তাকে সাধারণের সঠিক আর্থিক অবস্থার পরিচালক বলে গন্য করা যায় না।

চৈনিক পরিব্রাজক মা-হুয়ান বাংলাদেশে এসেছিলেন ১৪০৫ খ্রিস্টাব্দে। তিনি দেশের অধিকাংশ অধিবাসীকে কৃষিজীবি এবং দেশে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হওযায় জিনিস পত্র সস্তা ছিল বলে উল্লেখ করেন। তখন এদেশে বৃহৎ নৌযান নির্মান করা হত এবং বর্হিবাণিজ্যে প্রচলিত ছিল। মা-হুয়ানের বর্ণনা থেকে সমকালীন বাংলাদেশের যে চিত্র পাওয়া যায় তা সিলেটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে ধরে নিলেও পঞ্চদশ শতাব্দীতে সিলেটে ভীষন ক্ষরায় দুর্ভিক্ষ, মড়ক ও অনাচার সংঘটিত হয়েছিল বলে জয়ানন্দ রচিত ‘চৈতন্যমঙ্গল’ গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে।
üঔপনিবেশিক যুগ:- ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ্দৌলা পরাজয়ের মাধ্যমে এদেশে ইংরেজ রাজ শক্তির উত্থান ঘটে। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের নিকট থেকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি সনদ লাভ করে। এ সনদ বলে কোম্পানী রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতার অধিকারী হয়। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্তে কোম্পানী ঢাকায় পূর্ববঙ্গের জন্য একটি রাজস্ব বোর্ড স্থাপন করে। সিলেট এ বোর্ডের নিয়ন্ত্রনে আসে।
১৭৬৯ সালে কোম্পানী দেওয়ানি ভূক্ত প্রতি জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য জমির খাজনা ও অন্যান্য কর, কৃষি উৎপাদন, শিল্প উৎপাদন, প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য এক জন করে ইউরোপীয় সুপারভাইজার নিয়োগগের সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। দ্বিতীয় সুপার ভাইজার থাকার সময় এ পদের নাম করণ কনা হয় কালেক্টর। তিনি অবৈধ্যভাবে চুন, লবণ ও হাতির ব্যবসা করে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়। সেজন্য দুর্নীতি দায়ে তাঁকে পদচ্যুত করা হয়। পরবর্তী কালেক্টরদের মধ্য লিন্ডসের সময় কাল উল্লেখযোগ্য। এক টানা ১২ বছর সিলেটে কাটিয়ে তিনি বিপুল বৈভবের অধিকারী হয়েছিলেন। লিন্ডসের লিখিত বিবরণ, থেকে তৎকালীন অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। সেকালে চুন ব্যবস্থা ছিল ভাগ্যো উন্নয়নের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। এছাড়া হাতি ধরা ছিল বিড অর্জনের অরেকটি উপায়। সিলেট ভাটি অঞ্চলে ধান ছাড়া ভন্য ফসল উৎপন্ন হত না। উঁচু ভূমিতে আখ ও তুলার চাষ হতো। সিলেটে প্রচুর মাছ ধরা হত এবং মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরী করা হত।

অষ্টাদেশ শতাব্দীতে শেষ দিকে সিলেটে ঘন ঘন বন্যা দেখা দেয়। লিন্ডসের সময়ে ১৭৮১ সালের বন্যায় এ জেলার প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক মারা যায়। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে তদানীন্তন গর্ভনর জেনারেল লর্ড কর্নওযানেস এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন করেন। বি.সি এ্যালেন লিখেছেন ১৯০২-০৩ সালে সিলেটে মাথাপিছু ভূমি রাজস্ব মাত্র ৬ আনা ৩ পাই হলেও তা আদায় করা দিল খুবই কঠিন কাজ। এ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সিলেটের শহরাঞ্চলে কেরোসিন বাতি ব্যবহৃত হতো। সিলেট শহরে প্রথম বিজলি বাতি জ্বলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৯৩৪ সালে। গ্রামাঞ্চলে স্বচ্ছল লোকের বাতি জ্বালানোর জন্য বেড়ির তেল বা নাগবকেশরের তেল ব্যবহার করতেন। দরিদ্র জনসাধারন ব্যবহার করত পুঁটি জাতীয় মাছের তেল।


üবর্তমান যুগ:- ১৯৪৭ সালে জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত গণভোটে সিলেট পাকিস্তান ভূক্তির পক্ষে রায় দিয়ে সাবেক পূর্ব বঙ্গেঁর সাথে যুক্ত হয়। কিন্তু রেডক্লিফ রোয়েদাদে সিলেটের আয়তন সঙ্কুচিত হয়ে দাঁড়ায় ৪.৭৮৫ বর্গমাইল। সিলেট পুনরায় চট্রগ্রাম বিভাগে অন্তর্ভূক্ত হয়। দেশ বিভাগের প্রতিক্রিয়া সিলেটের অর্থনীতিতে ও অনুভূত হয়। ব্যবসা বাণিজ্যোর ক্ষেত্রে দেখা দেয় মন্দা। সিলেটের বাজারে জিনিস পত্র আমদানী রপ্তানীর সংযোগস্থল সমূহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইংরেজদের নিকট থেকে পাকিস্তানি আমলে আমরা একটি পশ্চাৎপদ কৃষি অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করি। দেশ বিভাগের জমিদারী উচ্ছেদ ও কৃষকদের নানা অধিকার আদায়ের দাবিতে জোরদার কৃষক আন্দোলন দাঙ্গা বেঁধে ওঠে। ১৯৫০ সালে প্রাদেশিক পরিষদে পূর্ববঙ্গ জমিদার হুকুম দখল ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হয়।


১৫৫০ সালে সিলেটে একজন কৃষিশ্রমিকের ভাগে চাষ করার জন্য জমির পরিমাণ ছিল গড়ে ২.২৬ একর। এছাড়া ১৯৮৩-৮৪ সালে কৃষি ও পশুসম্পদ শুমারি অনুসারে সিলেটে ভূমিহীন লোকের সংখ্যাও কম নয়। এ হিসাবে অনুযাযী যাদের কোন জমি নাই তেমন লোক মৌলভীবাজার সব চেয়ে বেশি। বাড়ি ছাড়া আর যাদের জমি নেই তেমন লোক হবিগঞ্জে বেশি আর বাড়ির সাথে অল্প জমি রয়েছে তেমন লোক সিলেট শহরে বেশি।





সিলেটে চা বাগান প্রতিষ্টার প্রায় শতবর্ষ পরে এদেশে প্রথম প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। ১৯৫৫ সালের পরবর্তীকালে সিলেট সহ বাংলাদেশর অন্যান্য স্থানে আরো ১৮টি গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে গোটা সিলেটে গ্যাস ক্ষেত্রের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৮টি। তা নীচে সারণিতে দেখানো হল:

নং
গ্যাসফিল্ড
আবিষ্কারের সন
সম্ভাব্য মজুদের পরিমান (বিলিয়ন ঘনফুট)

সিলেট (হরিপুর)
১৯৫৫
৪৪৪

ছাতক (টেংরাটিলা)
১৯৫৯
১৯০০

রশিদপুর
১৯৬০
২২৪২

কৈলাশটিলা
১৯৬২
৩৬৫৭

হবিগঞ্জ
১৯৬৩
৩৬৬৯

বিয়ানীবাজার
১৯৮১
২৪৩

ফেঞ্চুগঞ্জ
১৯৮৮
৩৫০

জালালাবাদ
১৯৮৯
১৫০০
চা একাধারে কৃষি ও শিল্পের আওতাভূক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫৮ টি চা বাগান রয়েছে। তারমধ্যে ১৩৩টি বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে আবস্থিত হলেও অনেক গুলো বাগান রুগ্ন শিল্পের তালিকা ভূক্ত। ছাতকে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রাচীনতম সিমেন্ট কারখানাটি এখনও দৈনিক প্রায় ৪০০ মে:টন সিমেন্ট উৎপাদন করে চলছে। প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক দেশের প্রথম সার কারখানাটি ফেঞ্চুগঞ্জে স্থাপিত হয় ১৯৬১ সালে। এ কারখানাটি ১০,০০০ লোকের কর্মসংস্থান এবং বছরে প্রায় ১,১৭,০০০ ইউরিয়া সার উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন। ভবিষ্যতে উন্নতমানের কাগজ উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে ১৯৬৮ সালে ছাতকে একটি কাগজ ও কাগজের মন্ডু তৈরীর কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হলে ও তা ১৯৭৫ সালের আগে সমাপ্ত হয়নি। কারখানাটিতে দৈনিক প্রায় ৮০ মে:টন মন্ডু তৈরী হয়, যা দেশের অন্য তিনটি কারখানার কাগজ তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়।
১৯৫৪ সালে সিলেট থেকে ছাতক পর্যন্ত রেললাইন চালু হওয়ায় সিলেটে স্থাপিত রেলপথের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ১৭২ মাইল। অদ্যবধি আর নতুন রেলপথ স্থাপিত হয়নি। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় সামরিক প্রয়োজনে নির্মিত সালুটিকর ও শমসেরনগর বিমান ঘাঁটিকে পাকিস্তান আমলে বেসামরিক বিমান বন্দরে রুপান্তরিত করা হয়।
সিলেটের অর্থনীতিতে স্থবিরতা বিরাজ করলে ও আপাতদৃষ্টিতে সিলেটকে একটি সমৃদ্ধ এলকা বলেই প্রতীয়মান হয়। সিলেটে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর কল্যাণে সিলেটের অর্থনীতিতে একটি কৃত্রিম স্বাচ্ছন্দ্যের ভাব বিরাজমান। সাম্প্রতিক এক হিসাব মতে বাংলাদেশর শতকরা ৮০ ভাগ বৈদেশিক মুদ্রার যোগানদাতা বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীরা। জাতীয় অর্থনীতিতে সিলেটিদের এ অবদান সিলেটের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। বরং সিলেটেদের দ্বারা প্রেরিত বিপুল পরিমান অর্থ দেশে তাদের আত্মীয় স্বজনের বিলাসব্যসন ও অন্যান্য অনুৎপাদনমীল কাজে ব্যবহৃত হয়ে সিলেটের সাধারণ মানুষের জীবনে নানা প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করছে।
সিলেট অঞ্চলে কার্যরত ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্টান ও এতদঞ্চলের স্বার্থে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যার্থ হচ্ছে। ব্যাংক গুলোতে সঞ্চয় স্ত্রুপীকৃত হলেও এর উৎপাদনশীল বিনিয়োগ হচ্ছেনা। ১৯৮৮-৮৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন ব্যাংকে মোট জমার পরিমান ছিল ১,০৯৭১২ কোটি টাকা অথচ সে বছর ব্যাংকের মোট ঋণ দানের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৩২,৭০ কোটি টাকা। অর্থ্যাৎ মোট সঞ্চিত অর্থের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এই অঞ্চলের লোকের কাছে লেগেছে।
জীবনে যাত্রার ব্যযের বিবেচনায় সিলেট তুলনামূলক ভাবে ব্যববহুল এলাকা হিসাবে বিবেচিত। দেশের অন্যান্য স্থানের চেওয়ে সিলেটে জিনিস পত্রের দামও তুলনামূলক বেশি। সিলেটে মজুরির হার অনেক ক্ষেত্রে দেশের গড় হারের চেয়ে বেশি হয়ে তাকে। সিলেটে কৃষি মজুরীর উচ্চহার কৃষি শ্রমিকের স্বল্পতার ইঙ্গিত বহণ করে। এর কারণ স্বরুপ বিপুল সংখ্যায় সিলেটিদের প্রবাসী হওয়ার কথা উল্লেখ করা যায়। রাজ মিস্ত্রির মজুরি বেশি হওয়া পেছনেও একই কারণ নিহিত। প্রবাসীদের অর্থে প্রচুর নির্মান কাজ চলছে বলে এক্ষেত্রেও শ্রমের চাহিদা অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইতিহাসের গতিধারায় সিলেট অঞ্চল একটি সম্পদশালী এলাকায় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু অঞ্চলটি অর্থনীতিতে কাঠামোগত মৌলিক কোনো পরিবর্তন ঘটছেনা বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবহেলা ছাপ সুস্পষ্ট। আর সে কারনে এখনে কিছু হতাশ ও ক্ষোভ জন্ম নিয়েছেন। বর্তমানে সিলেট অঞ্চল নিয়ে একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ স্থাপিত হয়েছে। সিলেটের জনসাধারনের ধারন একটি বিভাগীয় উন্নয়নের সূচনার মাধ্যমেই দূর করা সম্ভব এ অঞ্চলের কাংক্ষিত অগ্রয়াত্রার পথের সকল প্রতিবন্ধক।